দেখতে দেখতে সাফল্যের সঙ্গে পার হল দুটো বছর। ২০২২২ সালে, বেলুড় মঠ রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির মহাবিদ্যালয়ের সঙ্গে মৌ স্বাক্ষরিত হয় শিল্পায়ন নাট্যবিদ্যালয়ের। তারা যৌথভাবে এই প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন। মৌ স্বাক্ষরের দিন উপস্থিত ছিলেন রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ স্বামী মহাপ্রজ্ঞানন্দ মহারাজ, স্বামী শাস্ত্রজ্ঞানন্দ এবং দীপা ব্রহ্ম (প্রয়াত)। আগামী ৬ জুলাই, থেকে শুরু হচ্ছে নতুন বছরের অভিনয় শেখার ডিপ্লোমা কোর্সের পাঠক্রম। বছরভর এই পাঠক্রমে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বাংলার প্রথিতযশা নাট্যশিল্পীরা। শিল্পায়ন নাট্য বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আশিস চট্টোপাধ্যায় জানালেন, ‘প্রথম বছর থেকেই জেলার কোনো নাট্যবিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সামিল হয়েছে বেলুড় মঠ রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরের মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
শিল্পায়ন নাট্য বিদ্যালয় ভারতবর্ষের মধ্যে একমাত্র নাট্য বিদ্যালয়, যা বেলুড় মঠ রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির মহাবিদ্যালয়ের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মৌ চুক্তি করতে পেরেছে। ৬ জুলাই, থেকে এই নাট্য বিদ্যালয়ের নতুন সেশন শুরু হচ্ছে। এবছর বাংলার প্রথিতযশা নাট্য ব্যক্তিত্বরা পঠন-পাঠনে সহায়তা করবেন বলে কথা দিয়েছেন এবং ইতিমধ্যে তার একটা তালিকাও তৈরি হয়ে গেছে। হাতে কলমে অভিনয়ের এক বছরের এই কোর্সের পর এখান থেকে যে সার্টিফিকেট দেওয়া হয় তাতে রামকৃষ্ণ মিশন এবং শিল্পায়নের লোগো থাকে যৌথভাবে। যে কোনো শিক্ষার্থীর জীবনে এটি অনেক বড় প্রাপ্তি’। এক বছরের এই পাঠ্যক্রমের ক্লাস হবে প্রতি রবিবার সকাল থেকে। ছোট এবং বড়দের বিভাগ নিয়ে থাকবে দুটি পৃথক ক্লাস। ছোটদের বয়সসীমা ৯ বছর থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত। বড়দের ১৪ বছরের পর থেকে শুরু করে বয়সের কোনো উর্ধসীমা নেই। ছমাসে একটা সেমেস্টারে থিওরি ও প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা নেওয়া হবে। বছর শেষে ফাইনাল পরীক্ষা। প্রশিক্ষণের পর শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট দেওয়া হবে যৌথভাবে শিল্পায়ন নাট্যবিদ্যালয় ও বেলুড় মঠ রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির মহাবিদ্যালযের পক্ষ থেকে।
বেলুড় মঠ রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান দীপঙ্কর মল্লিক জানালেন, ‘শিল্পায়ন নাট্য বিদ্যালয় এবং রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির বেলুড়মঠ, এই সশ্বাসিত প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে এই ডিপ্লোমা কোর্স চালু করেছে এবং এর একটা উদ্দেশ্য আছে। সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দিকে যদি তাকানো যায়, নাট্য প্রশিক্ষণ এমন একটি জায়গায় যেখানে গিয়ে স্টুডেন্টরা নিজেদের ইচ্ছা অনুসারে জীবন এবং জীবিকার একটি পথান্বেষণ করতে পারে। দ্বিতীয়ত, শিল্পায়ন নাট্যবিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য ছিল এমন একটা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, যারা ভবিষ্যতে একইসঙ্গে একাডেমিক সাউন্ডের মধ্যে আসবে এবং ছাত্র-ছাত্রীরা অভিনয় শেখার সঙ্গে সঙ্গে এমন কতগুলো বিষয়কে জানবে ও শিখবে যেগুলো আলাদাভাবে তাদের পক্ষে আয়ত্ত করা মুশকিল। তাদেরকে এমনভাবে গ্রুমিং করানো হবে যাতে করে অভিনয়ের আলো থেকে মিউজিক, ডান্স থেকে কস্টিউম তৈরি এই সমস্ত বিষয়গুলোকে ভালো করে জানতে পারবে। এমনকি এই প্রশিক্ষণে মার্শাল আর্ট পর্যন্ত শেখানো হয়। শিক্ষার্থীদের পরবর্তী পেশাদার জীবনের জন্য ভালো করে তৈরি করে দেওয়া এর উদ্দেশ্য। এর ফলে গ্রাম তথা মফস্বলের ছেলেমেয়েরাও অভিনয়টা ভালো করে শিখে পরবর্তী জীবনে তাকে কাজে লাগাতে পারবে। এই পাঠ্যক্রমের বয়স এখন তিন বছর, আশা করি ভবিষ্যতেও এটা চলতে থাকবে। তবেই এই প্রশিক্ষণ সার্থকতা পাবে’