‘বর্ডারলেস ডক্টরস’ তৈরি হয় ৩ বছর আগে ২০১৯ এ সার্ক দেশের অগ্রগণ্য অন্ত্রশল্য চিকিৎসকদের নিয়ে। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্থান, ভুটান, নেপাল, আফগানিস্থানের বিশিষ্ট অন্ত্রশল্য চিকিৎসকদের নিয়ে এই আন্তর্জাতিক মঞ্চটি তৈরীতে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন কলকাতার বিশিষ্ট অন্ত্রশল্য চিকিৎসক ড: সত্যপ্রিয় দে সরকার। ড: দে সরকার বর্তমানে জাতীয় এন্ডোস্কোপি বোর্ডের(IAGES) চেয়ারম্যান পদেও নিযুক্ত আছেন। তিনি IAGES -এর সার্ক বোর্ডের উপদেষ্টা হিসাবেও নিযুক্ত আছেন।
১৫ মার্চ কলকাতা প্রেস ক্লাবে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে ড: সত্যপ্রিয় দে সরকার জানান “আমরা দুটি ভাগে এই কাজ করি। এক “প্রতিবেশী কে চেনা”। এই উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতি জুম মিটিং এ এক একটি দেশের এক একটি শহর সম্পর্কে সে দেশের তথ্য ২০ মিনিট ধরে ভিডিও দেখানো হয়, সে সূত্রে রংপুর, করাচি, রাজমুন্ডি, ধারাণ, কলম্বো সম্পর্কে খবর দেওয়া হয় সে দেশের বাছাই করা কোনো চিকিৎসকের তরফে। এরপর কোনো সুনিদিষ্ট শল্যচিকিৎসার বিষয়ে সব দেশের প্রতিনিধিরা তাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন। এরপর ১৮ টি ক্লাসে ৪ মাসে শতাধিক সব দেশের শল্যচিকিৎসকদের অন্ধ্রে র এন্ডোস্কোপি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, ও তাদের সব শেষে তাদের মানপত্র দেওয়া হয়। প্রতিটা দেশের একজন করে প্রবীণতম শল্যচিকিৎসক শিক্ষক কে সন্মাননা দেওয়া হয়। এর পরবর্তী পর্যায়এ আগে লেসার, হার্নিয়া, রোবোটিক, আর্টিফিসিয়াল ইন্টালিজেন্স এন্ডোস্কোপি তে ব্যাবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।”
গত ১৮ ই ফেব্রুয়ারি কলকাতা থেকে সর্বাধুনিক প্রদ্ধতিতে হার্নিয়ার শল্য চিকিৎসা সরাসরি ভারত ও সার্ক এর সব দেশের ২১ টি শহরে প্রচার করা হয়, যার মধ্যে পাকিস্থানের করাচি, ইসলামাবাদ, লাহোরের চিকিৎসকদের অংশগ্রহণ এক অভূতপূর্ব জ্ঞানের আদানপ্রদানের জন্য সীমানার বাধা অতিক্রম করার নজির স্থাপন করেছে।
ড: দে সরকার আরও জানান, আফগানিস্থানের চিকিৎসকরাও এই প্রয়াসে যুক্ত ছিলেন। তালিবানদের ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্থানের নেতৃত্ব দেশ ছাড়তে বাধ্য হলে সে দেশে বর্ডারলেস ডক্টরস গ্রুপের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যদিও তাদের নেতৃত্বরা ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশ থেকে জুম মিটিং এ নিয়মিত অংশ গ্রহণ করেন সব অনুষ্ঠানে। সাম্প্রতিক সময়ে আবার আফগানিস্তানে বর্ডারলেস ডক্টরস গ্রুপের অনুষ্ঠান গুলি সম্প্রচারে ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
শল্য-চিকিৎসার জ্ঞানের আদান-প্রদানের এই অভিনব উদ্যোগ সার্ক অন্তর্ভুক্ত প্রতিবেশী দেশগুলির সাথে ভারতের সার্বিক সম্পর্কের উন্নতিতে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।
সর্বোপরি কৃতি বাঙালি শল্য-চিকিৎসক ড: সত্যপ্রিয় দে সরকারের প্রচেষ্টায় কলকাতা হয়ে উঠেছে ভারতীয় উপমহাদেশে অন্ত্র-শল্য চিকিৎসাবিদ্যা চর্চার প্রাণকেন্দ্র। বিশ্ব জ্ঞানচর্চার মানচিত্রে কলকাতা তথা বাঙালীর এটি একটি গর্বের পুনরুত্থান।