২১ এপ্রিল অহীন্দ্রমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল নব রবি কিরণ এবং নব নালন্দা সঙ্গীত শিক্ষায়তন আয়োজিত দ্বিতীয় বর্ষের, সারা বাংলা ব্যাপী রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রতিযোগিতা ‘গানের ভিতর দিয়ে’। উন্মেষ (১০ থেকে ১৪ বছর), বিকাশ (১৫ থেকে ১৮ বছর) এবং ঐশ্বর্য (১৯ বছর ও তার ঊর্ধ্বে) – এই তিনটি বিভাগ থেকে উঠে আসা মোট ৪০ জন প্রতিযোগী নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় চূড়ান্ত পর্ব।
এই চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় বিচারকের আসনে ছিলেন জয়তী চক্রবর্তী, মনোজ মুরলী নায়ার, অপালা বসু, অলক রায়চৌধুরী, প্রবুদ্ধ রাহা, শমীক পাল, অদিতি গুপ্তর মতো প্রথিতযশা সঙ্গীতশিল্পীরা।
এই প্রতিযোগিতার প্রথম ধাপ অর্থাৎ প্রাক-প্রাথমিক পর্যায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল অনলাইনে, দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হয় অফলাইনে কলকাতা ও শান্তিনিকেতনে এবং সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় কলকাতায়।
এই তিনটি বিভাগের চূড়ান্ত প্রতিযোগীদের মধ্যে থেকে উন্মেষ বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেন শ্রীপর্ণিকা মিশ্র, দ্বিতীয় অভিরূপ মাইতি, তৃতীয় আপ্তদূতী দাশগুপ্ত। বিকাশ বিভাগে প্রথম হন সুলগ্না গোস্বামী, দ্বিতীয় সত্যজিৎ দেবরায়, তৃতীয় স্বস্তিকা পণ্ডিত এবং ঐশ্বর্য বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেন প্রীতম চক্রবর্তী, দ্বিতীয় ধ্রুবজ্যোতি সিনহা, তৃতীয় শ্রেয়া চক্রবর্তী।
বিজয়ীরা প্রথম পুরস্কার হিসেবে পান ১২ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৮ হাজার টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার ৫ হাজার টাকা। এছাড়াও বিজয়ীরা নব নালন্দার রবীন্দ্রস্মরণ অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশনের সুযোগ পাবেন। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের জন্য থাকছে নব রবি কিরণ ইউটিউব চ্যানেলে একটি করে মিউজিক ভিডিও করার চুক্তি এবং নগদ পুরস্কার।
এছাড়াও প্রতি বছর দেওয়া হয়ে থাকে সুরের সাথী নামে ভারতী মিত্র স্মৃতি পুরস্কার। এবছর এই পুরস্কার পেলেন তন্বঙ্গী মুখার্জী (উন্মেষ), রিতিকা চ্যাটার্জী (বিকাশ) এবং জ্যোতির্ময় সেন (ঐশ্বর্য)।
সারা বাংলা রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রতিযোগিতার রূপকার অরিজিৎ মিত্র জানালেন, ‘এটা রিয়ালিটি শো নয়, একটা প্রতিযোগিতা। আমরা চাই বর্তমান প্রজন্ম রবীন্দ্রসঙ্গীতের চর্চা আরও বেশি করে করুক। রবীন্দ্রনাথ তো সবচেয়ে আধুনিক ছিলেন তাঁর চিন্তা-চেতনায়, সৃষ্টিতে, এমন কি কথা-সুর-তাল-ছন্দ সব কিছুতেই। তাই কবিগুরুকে আশ্রয় করে শুধুমাত্র রবীন্দ্রসঙ্গীতের ওপর এই প্রতিযোগিতার সূচনা করেছিলাম। প্রথম বছরের সাফল্যের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় দ্বিতীয় বর্ষের। অবশেষে এত মাসের পরিশ্রমের অবসান ঘটলো। অহীন্দ্রমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল উন্মেষ, বিকাশ এবং ঐশ্বর্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের গ্র্যান্ড ফিনালে। বিজেতাদের শুভেচ্ছা জানাই। আর যারা এই ফাইনালে অংশগ্রহণ করেছে তারা সকলেই সমানভাবে বিজয়ী, কাজেই আশাহত হওয়ার কোনও কারণ নেই। আসলে প্রতিযোগিতায় একটা বিষয় তো থেকেই যায়, ওই পাঁচ মিনিটে কে কি পারফরম্যান্স দিচ্ছে? সেটা শুধু গান নয়, পরীক্ষার ক্ষেত্রে, খেলার ক্ষেত্রে এরকম সব ক্ষেত্রেই। আজ বিশেষ করে এটাই প্রাপ্তি যে নানা বয়সের মানুষের থেকে নানান পর্যায়ের, আঙ্গিকের রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনতে পেলাম প্রাণভরে। আর শোনাটাও একটা খুব আনন্দের বিষয়। এই প্রতিযোগিতার বিচারক মণ্ডলীতে যারা ছিলেন তারা সকলেই প্রথিতযশা সঙ্গীতশিল্পী। দর্শক, শ্রোতা, সংবাদমাধ্যম সকলের সহায়তা পেলে পরের বছর আবার আমরা তৃতীয় বর্ষের ‘গানের ভিতর দিয়ে’ প্রতিযোগিতা নিয়ে আসব’।