পূর্ব কোলকাতা ফুলবাগান থানার কাছে পূর্ব কলকাতা মাহেশ্বরী সমাজের তিনদিনব্যাপী ১৫ তম গাঙ্গোর মহোৎসব পালিত হল ২৩ থেকে ২৫ মার্চ। এই উৎসব রাজস্থানের প্রাচীনতম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎসবগুলির একটি। গাঙ্গোর শব্দের অর্থ দেবাদিদেব মহেশ্বর ও পার্বতীর মিলন। ১৮ দিনের উৎসবের মূল দিন শেষ পর্যায়ের তিনদিন। শীতের শেষে বসন্তের উদযাপনে নববর্ষের ক্ষণ সূচিত হয়।
এই উৎসবে বিবাহিত মহিলারা যেমন স্বামী ও পরিবারের সমৃদ্ধি মহেশ্বর ও পার্বতীদেবীর কাছে কামনা করেন, তেমন অবিবাহিত মাহেশ্বরী সমাজের মেয়েরা মহেশ্বরের মত আদর্শ স্বামী কামনায় ঈশ্বরের কাছে নিবেদন রাখেন।
সংগঠনের ভূতপূর্ব সভাপতি হেমন্ত মারদা এখন এই উৎসবের সংযোজক। তিনি বলেন, কোলকাতায় বহুদিন আগে থেকে রাজস্থানের মাহেশ্বরী সমাজের বাস। পূর্ব কলকাতায় একসময় গড়ে তোলা হয় পূর্ব কলকাতা মাহেশ্বরী সমাজ। বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবের সঙ্গে সমাজসেবামূলক অনুষ্ঠানে বছরভর নিয়োজিত থাকে এই সংগঠন। চলতি বছরে আর্থিক দুর্বল নারীদের বস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। এই বছর প্রায় সাড়ে চার হাজার বিবাহিত ও অবিবাহিত মহিলা উৎসবে যোগ দিয়েছেন। বেশ কয়েকজন বিদেশ থেকে কলকাতায় এসে এই উৎসবে সামিল হয়ে আন্তরিক তৃপ্ত হয়েছেন। আগামী প্রজন্মের কাছে উৎসবের তাৎপর্য তুলে ধরার এক দায়িত্ব আমরা পালন করছি।
গাঙ্গোর উৎসবের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন উৎসব কমিটির সমন্বয়কারী রেশমি বিয়ানী। জনপ্রিয়তার নিরিখে মাহেশ্বরী সম্প্রদায়ের এই উৎসব গত ১৪ বছরে শুধু নিজস্ব পরিমণ্ডলে থেমে নেই, সংগঠনের পদাধিকারীদের আন্তরিক চেষ্টায় মরু রাজ্যের মানুষ ছাড়াও কলকাতার অন্য সম্প্রদায়ের কাছেও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। সংগঠনের বর্তমান সভাপতি রাজেশ চান্দক, সম্পাদক নরেশ কোঠারি এবং সংগঠনের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ঘনশ্যামদাস কোঠারি, মোহনলাল রাঠি, সুরেশ ঝাওয়ার, মঞ্জু ঝাওয়ার, কমলা বাইতি, রেশমি চান্দক, ভগবতী মুন্দ্রা, বনোয়ারি বাইতি প্রমুখ জানালেন, উৎসবের আড়ালে সমাজবদ্ধ মানুষের নিজেদের সম্প্রীতি রক্ষার প্রয়াস পরিলক্ষিত হয় এই গঙ্গোর উৎসবে।