শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসের সাধনাক্ষেত্র দক্ষিণেশ্বরে প্রতিবছর ১লা জানুয়ারি কল্পতরু উৎসব মহাসমারোহে পালিত হয়। সারা দেশ থেকে রামকৃষ্ণ-অনুগামীরা এই দিন দক্ষিণেশ্বরে পূজা দিতে আসেন। এদিন দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরের পাশাপাশি শ্রীরামকৃষ্ণ মহামণ্ডল ও ইনফ্যাক পালন করলো কল্পতরু উৎসব। সারাদিন ধরে ভক্তদের মধ্যে ভোগ-প্রসাদ বিতরণ ও ভক্তিমূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হয় উৎসব।
রামকৃষ্ণ মহামন্ডল আয়োজিত এ বৎসরের কল্পতরু উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ ছিল সারাদিন ব্যাপী শ্রীরামকৃষ্ণের আধ্যাত্মিক ভাবনা নির্ভর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ফোরাম অফ আর্ট এন্ড কালচার (INFAC)। ইনফ্যাকের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ডঃ নুপুর গাঙ্গুলীর তত্ত্বাবধানে শিল্পীরা সকাল ছয়টায় প্রভাতী কীর্তন দিয়ে শুরু করে সারাদিন ধরে ভক্তিগীতি, স্তোত্রপাঠ, গীতি আলেখ্য, রামকৃষ্ণ স্মরণম্, কীর্তনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটিকে ভক্তদের কাছে উপভোগ্য করে তোলে। “ভারতীয় সংস্কৃতি সঙ্গে আধ্যাত্মিকতা ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। এখানে আমরা শ্রীরামকৃষ্ণের ভাবধারার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ অনুষ্ঠান ভক্তদের জন্য পরিকল্পনা করেছি”, জানান ইনফ্যাকের চেয়ারম্যান শ্রী তাপস গন চৌধুরী।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য শ্রীরামকৃষ্ণ মহামন্ডলের এই প্রাঙ্গণ ছিল শ্রীরামকৃষ্ণের গৃহী ভক্ত শ্রী যদুলাল মল্লিকের বাগানবাড়ী। এখানে বেড়াতে এসেই শ্রীরামকৃষ্ণ খ্রীস্ট দর্শন করেন। শ্রী রামকৃষ্ণের স্মৃতিবিজড়িত সেই মাদার মেরী কক্ষ দেখতে এখনো ভক্তরা নিয়মিত আসেন এখানে।
শ্রীরামকৃষ্ণ মহামন্ডল এই প্রাঙ্গণের দেখাশোনা ছাড়াও সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত। “আশেপাশের শিশুদের জন্য আমরা একটি প্রাথমিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছি আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা মাথায় রেখে”, জানালেন সংস্থার ট্রাস্টি শ্রী রানা রাজর্ষি দে।
সারাদিন ধরে সহস্রাধিক শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্ত এই কল্পতরু উৎসবে অংশগ্রহণ করে।