২ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কো-অপারেশন বিভাগের মন্ত্রী অরূপ রায়, ফাদার ডেভিস এসডিবি, ফাদার মণি ম্যানুয়াল, সমাজকর্মী সীমা ভৌমিক সহ একাধিক শিল্প ও চিত্রপ্রেমী মানুষের উপস্থিতিতে চিত্রশিল্পী দিবাকর চক্রবর্তীর ৩১ তম চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন হল কলকাতা আইসিসিআরের যামিনী রায় আর্ট গ্যালারিতে। প্রদর্শনীটি চলবে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত।
উদ্বোধনের প্রাক্কালে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে চিত্রকর দিবাকর জানান, “যত দিন যাচ্ছে আর্থসামাজিক পরিস্থিতির কারণে শহুরে নরনারীর দৈনন্দিন জীবন থেকে রঙ হারিয়ে তাঁরা অনেকটাই বিবর্ণ হয়ে পড়ছেন।”
প্রদর্শনীতে পঞ্চাশটার মতো চিত্র দেখা গেলেও রঙিন চিত্র-র পাশাপাশি প্রায় সম সংখ্যক সাদা কালো ছবির রাখার কারণ সম্পর্কে সাংবাদিকগণ জানতে চাইলে চিত্রকর দিবাকর চক্রবর্তী তাঁর মতামত জানতে গিয়ে বলেন, “সেক্টর ফাইভের তথ্য প্রযুক্তি শিল্পে কর্মরত একাধিক পুরুষ মহিলাদের মুখাবয়বের ছবি এখানে রেখেছি। বিভিন্ন সময়ে তাঁদের সাথে কথা বলে বা তাঁদের কর্মক্লান্ত শরীর ও মুখ দেখে মনে হয়েছে বর্তমানে শহুরে নরনারীদের জীবন বড়োই বিবর্ণ হয়ে উঠেছে। সেই কারণেই আমার চিত্র প্রদর্শনীতে রঙিনের সাপেক্ষে প্রায় সমসংখ্যক সাদা কালো ছবিও স্থান পেয়েছে।”
দিবাকরের প্রদর্শনীতে উল্লেখযোগ্যভাবে উপস্থিত নানান চেহারার তাল ও খেজুর গাছ। শহুরে জীবনের ছবি আঁকতে গিয়ে যখন দিবাকর বেছে নেন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের মুখ তেমনি গ্রামবাংলার শান্ত প্রকৃতির চিরন্তন প্রতীক হিসেবে তার ছবিতে ঘুরেফিরে এসেছে তাল ও খেজুরগাছ।
“তালগাছের ভাবনা কিভাবে যেন বারবার ফিরে ফিরে আসছে আমার ছবিতে। গ্রামবাংলার সব ল্যান্ডস্কেপে নানা চেহারার তালগাছ আমি আঁকি। তালগাছকে আমি দেখতে পাই সব প্রকৃতির ল্যান্ডস্কেপে”, বললেন শিল্পী তাঁরই আঁকা একটি তালগাছের দিকে অপলক চেয়ে থেকে।
কর্মক্লান্ত শহুরে তরুণীর মুখ থেকে গ্রামবাংলার পুকুরপারের ন্যুব্জ তালগাছ, দিবাকরের কাজে চিত্রায়িত হয়েছে যাবতীয় বিষণ্নতা, বিপপন্নতাকে প্রতিহত করে চিরাচরিত জীবনের জয়গান।