২৪ ও ২৫ ডিসেম্বর কেষ্টপুর প্রফুল্ল কানন সংলগ্ন সুকান্ত পার্কের বেলাভূমিতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল নহলী আয়োজিত নবম অন্তরঙ্গ নাট্যোৎসব ২০২৩। ২০০৫ সালে পথ চলা শুরু করেছিল নহলী নাট্যদল। নহলী নাট্যদলের কর্ণধার শৈবাল দাস জানালেন, “চারিদিকে এত খারাপের মাঝে আমরা মানুষের মধ্যে একটা ইতিবাচক ভাবনা ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ভালোবেসে থিয়েটারটা করে চলেছি। পাড়ার জেঠিমা কাকিমা বয়োজ্যেষ্ঠদের এই উৎসবে শামিল করার জন্যই আমরা প্রতিবার ঘরোয়া ভাবে পাড়াতেই আমাদের বার্ষিক নাট্যোৎসবের আয়োজন করে থাকি। আর তাতে প্রতিটা মানুষ আন্তরিকভাবে অংশগ্রহণ করেন। সাধ্যমতো আমাদের পাশে থাকেন এবং প্রাণ ভরে আশীর্বাদ করেন। এটাই আমাদের বিরাট প্রাপ্তি। তাই আমাদের কথায় আন্তরিকতার মোড়কে মোড়া আমাদের এই নাট্যোৎসব”।
২৪ ও ২৫ ডিসেম্বর দুদিন ব্যাপী মঞ্চস্থ হয় মোট ৬ টি নাটক। প্রথম দিনে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে নাট্যোৎসবের শুভ সূচনা করেন বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব সৌমিত্র বসু। এদিন মঞ্চস্থ হয় তিনটি নাটক। কৃতি মজুমদারের নির্দেশনায়, কথক পারফর্মিং রেপার্টয়্যার এর নাটক মুক্তির জন্য, সৌমিত্র বসুর নির্দেশনায় বালিগঞ্জ অন্তর্মুখ এর ভিতর বাহিরে এবং সেঁজুতি বাগচীর নির্দেশনায় উহিণী কলকাতার ঢঙ। সাম্প্রদায়িকতা, সামাজিক বিভেদ-বিভাজনের মতো বিষয় উঠে এসেছে ভিতর বাহিরে নাটকে। লকডাউনের সময়কার কঠিনপরিস্থিতিকে কৌতুকের মোড়কে ঢঙ নাটকে তুলে ধরা হয়েছে। মুন্সি প্রেমচাঁদের গল্প অবলম্বনে নির্মিত মুক্তির জন্য নাটকে উঠে আসে মানুষ-মানুষের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব লড়াইয়ের মতো বিষয়।
দ্বিতীয় দিনও মঞ্চস্থ হয় তিনটি নাটক। নিরাপদ মণ্ডলের নির্দেশনায় সত্যনারায়ণ পুতুল নাট্য সংস্থার, পুতুল নাটক অরণ্য রোদন। শৈবাল দাসের নির্দেশনায় নহলীর কাক-কথা এবং অতনু সরকারের নির্দেশনায় থিয়েলাইট এর অ-মৃতার সন্ধানে। প্রকৃতিতে প্রাণী ও উদ্ভিদ কুলের মধ্যে ভারসাম্যতা রক্ষা করার বিষয় উঠে এসেছে অরণ্য রোদন পুতুল নাটকে। বর্তমান সময় দাঁড়িয়ে কাক আর কুঁজোর গল্প বলা হয়েছে কাক-কথা নাটকে। অ-মৃতার সন্ধানে নাটকে, তিন দশক কোমাচ্ছন্ন থাকা নাট্যাভিনেত্রী অমৃতা চেতনা ফিরে পায় অতিমারির সময়। অচেনা শতাব্দীতে নিজেকে আবিষ্কারের সন্ধানে নামে অমৃতা।